গরিব দেশগুলোর শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য যানবাহনে চড়ার সুযোগ সীমিত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব শিশুকে হেঁটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। এ কারণে এসব দেশের শিশুদের সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি অন্য দেশগুলোর তুলনায় বেশি হয়। জাতিসংঘের বিজ্ঞান, শিক্ষা ও ঐতিহ্যবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং (জিইএম) শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শিশুদের সড়ক ব্যবহারের নিয়ম শেখানো ও ব্যবস্থাপনাগত পরিবর্তন—সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে বলে মনে করছে ইউনেসকো।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে গত রোববার বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় সড়কে শিশুর মৃত্যু রোধে কয়েকটি দেশ কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। শিশুদের ট্রাফিক আইন ও সড়কে চলাচলের নিয়মকানুন সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। সড়কে বসানো হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি দুর্ঘটনা প্রতিরোধী ব্যবস্থা। শিশুদের সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এসব কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে ইউনেসকো বলছে, ৬০টি দেশের প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার কিলোমিটার সড়কে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, সেখানে প্রায় ৮০ শতাংশ যানবাহন প্রতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলে। পথচারীদের চলাচলের জন্য নেই ফুটপাত। মহাসড়কের অবস্থাও বেহাল। বেশির ভাগ গরিব দেশে মহাসড়কের পাশেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থান। অনেক জায়গায় ব্যস্ত মহাসড়ক পার হয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে হয়। এসব কারণে হেঁটে বিদ্যালয়গামী শিশুদের সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ও মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
শিশুদের সড়ক ব্যবহারের নিয়ম শেখানো ও ব্যবস্থাপনাগত পরিবর্তন—সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে বলে মনে করছে ইউনেসকো।
গরিব দেশগুলোর শিশুদের সড়কে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের জন্য নিরাপদ সড়ক তৈরিতে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। শিশুদের সড়ক ব্যবহারের শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার নিরাপদ রুট প্রণয়ন করেছে দেশটি। এমন উদ্যোগের ফলে দেশটির সড়কে শিশুদের হতাহতের ঘটনা ১৯৮৮ সালের তুলনায় ২০১২ সালে ৯৫ শতাংশ কমে এসেছে। গরিব দেশগুলোও এমন সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সড়কে শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে পারে।
আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার সরকার গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টনারশিপ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ সহায়তায় মহাসড়কে যানবাহনের গতি কমিয়ে আনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হতাহতের ঝুঁকি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। থাইল্যান্ডে ১০ লাখের বেশি শিশু মা–বাবার মোটরসাইকেলে করে বিদ্যালয়ে যায়। তাদের মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশ হেলমেট ব্যবহার করে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তাদের সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের সড়ক ব্যবহারে সচেতন করতে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে উরুগুয়ে সরকার। উগান্ডার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একই ধরনের উদ্যোগ নিতে চাইছে দক্ষিণ আমেরিকার অন্য দেশগুলো।