যৌক্তিক সমালোচনার উপযুক্ত জবাব না থাকলে সমালোচনাকারীর চরিত্র হননের অপচেষ্টায় লিপ্ত হওয়া বহুল ব্যবহৃত একটি অপকৌশল। আর এমন অপকৌশলে লিপ্ত হয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। সুজন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এমনটি মনে করছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় সুজন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার মিথ্যচারের প্রতিবাদ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সভাপতিত্ব করেন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২৭ জানুয়ারি সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত ‘আরএফইডি টক উইথ কে এম নুরুল হুদা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে ১ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগসহ কিছু কুরুচিপূর্ণ, অশালীন, অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। দেশের মর্যাদাপূর্ণ একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে বসে তাকে এমন মিথ্যাচার করতে দেখে আমরা হতবাক।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বদিউল আলম মজুমদারের ব্যক্তিগত আর্থিক লেনদেনের কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিইসি হুদাকেই এসব অভিযোগের প্রমাণ দিতে হবে। একইসঙ্গে জবাব দিতে হবে, তার কাছে এ সম্পর্কে কোনোরূপ তথ্য থাকলে তিনি কেন তা প্রকাশ করলেন না? কেন অভিযোগটি তদন্ত করলেন না? দুর্নীতি দমন কমিশনেই বা কেন তা প্রেরণ করলেন না?
রিজওয়ানা বলেন, একটি বিতর্কিত নির্বাচনের অকাট্য কিছু প্রমাণ ও তথ্য প্রকাশ করায় সুজন ও বদিউল আলম মজুমদারের ওপর সিইসি কে এম নূরুল হুদার ক্ষিপ্ত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে সিইসি সব অভিযোগ এবং সুজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্যের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়।
সুজন সম্পাদক সিইসির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবে কি না- প্রশ্ন করা হলে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আদালতে গেলে রিমেডি (প্রতিকার) পাওয়া যাবে কি না? বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা বিবেচ্য বিষয়। তবুও আলোচনা করব। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। অবশ্যই মানহানি হয়েছে। শুধু আমার নয়, পুরো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের মানহানি হয়েছে।
সুজন কাজ পাওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে, কথা বলেছে- এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সুজন কোনোদিনই বা আমি নিজে বা আমাদের প্রতিনিধি কাজ পাওয়ার ব্যাপারে কোনো আলাপ হয়নি, চিঠিও দেয়নি। চিঠি দেওয়া হলে প্রকাশ কররেন না কেন। এসব বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সংবাদ সম্মেলনে ইসির সাবেক আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার যা বলেছেন, আমি আশ্চর্য হইনি। একটা পদে থাকলে তার যখন সমালোচনা করা হয়। সমালোচনার পাল্টা যদি কোনো সদুত্তর না থাকে, কৃতকার্যের ব্যাখ্যা না থাকে, তবে সবচেয়ে সহজ পন্থা হল, সমালোচনা এড়িয়ে গিয়ে সমালোচককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়।
সুজনের সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, বর্তমান সিইসি নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের যে দুর্নাম জুটিয়েছেন তার জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিৎ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সাবেক বিচারপতি এমএ মতিন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ।