ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক বৈরিতার প্রভাব শতভাগই পড়ে দুই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। দেশ দুটির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হয় না বহু বছর ধরে। বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট ছাড়া দুই দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ তেমন একটা হয় না।
তবে এবার ভিন্ন একটা প্রেক্ষাপটে ভারতীয় তারকা ব্যাটার চেতেশ্বর পূজারার সঙ্গে মেশার সুযোগ হয়েছে পাকিস্তানের উইকেটকিপার-ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের। আর সব বৈরিতাকে পেছনে ফেলে পূজারাকে রীতিমতো নিজের ব্যাটিং পরামর্শক বানিয়ে নিলেন তিনি।
পূজারাও কার্পণ্য করলেন না। নিজেকে উজাড় করে দিলেন এ পাকিস্তানি তারকার জন্য।
ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে গিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলছেন পূজারা ও রিজওয়ান। এ মুহূর্তে সাসেক্সের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলছেন দুজনে। তবে রিজওয়ান তেমন রান পাচ্ছেন না। অন্যদিকে পূজারা ব্যাট হাতে নামলেই সেঞ্চুরি হাঁকাচ্ছেন।
চার দিনের চার ম্যাচে দুটি শতক ও দুটি দ্বিশতকে পূজারার মোট রান ৭১৪। সেখানে রিজওয়ানের ব্যাট থেকে এসেছে ১০৫ রান। প্রথম তিন ইনিংসে রিজওয়ানের ব্যাট থেকে এসেছে যথাক্রমে ২২, ০ ও ৪। শেষ ইনিংসে ৭৯ রান করতে সক্ষম হলেও আউট হয়ে যান।
এমন অবস্থায় পূজারার কাছে ছুটে গেলেন রিজওয়ান। জানতে চাইলেন, কি করে সেঞ্চুরি হাঁকাচ্ছেন তিনি? পূজারাও অকপটে রিজওয়ানের সমস্যাগুলো ধরিয়ে দেন। জানিয়ে দেন, উপমহাদেশের বাইরে কীভাবে ব্যাট করতে হয়।
সে বিষয়ে রিজওয়ান বলেছেন, ‘আগে আউট হয়ে যাওয়ার পর পূজারার সঙ্গে আমার কথা হয়। আমাকে কিছু বিষয় বলেন, যার মধ্যে একটি ছিল শরীর বলের কাছে নিয়ে খেলা। সবাই জানেন, সাদা বলের ক্রিকেট আমরা ধারাবাহিকভাবে শরীর দূরে রেখে কয়েক বছর ধরে খেলে আসছি। সাদা বলে, আপনি আপনার শরীরের খুব কাছাকাছি খেলবেন না। কারণ বলটি ততটা সুইং বা সিম করে না।’
A fantastic partnership of 154 comes to an end, but great batting today from these two. ? pic.twitter.com/5ZPfX6bf7I
— Sussex Cricket (@SussexCCC) April 30, 2022
এশিয়া ও ইংল্যান্ডের কন্ডিশনের পার্থক্যটাও রিজওয়ানকে শিখিয়েছেন পূজারা।
২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বর্ষসেরা হওয়া ব্যাটার বলেন, ‘ইংল্যান্ডে খেলতে এসে শুরুতে শরীর দূরে রেখে খেলায় একইভাবে দুবার আউট হয়েছি। আমি পূজারার সঙ্গে নেটে দেখা করি। তিনি বলেছিলেন, এশিয়াতে ড্রাইভ করার সময় আমরা বলের পেছনে তাড়া করি। কিন্তু এখানে সেটা করার প্রয়োজন নেই। এখানে শরীরের কাছে খেলতে হয়। ’
পূজারার পরামর্শ মেনে রিজওয়ান ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ফর্মে ফিরবেন কিনা সেটি সময়-ই বলে দেবে। তবে ভারত ও পাকিস্তানের দুই তারকার এমন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্রিকেটে অনন্য এক উদাহরণের সৃষ্টি করেছে, যা দুই দেশের ক্রিকেট সমর্থকরা উপভোগ করছেন দারুণভাবে।
তথ্যসূত্র: ইএসপিএন ক্রিকইনফো