প্রযুক্তির কল্যাণে গণমাধ্যমের চেহারা দ্রুত বদলে যাচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়াতেও তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সামাজিক মাধ্যমের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই তাকে টিকে থাকতে হচ্ছে। দৈনিকগুলোও অনলাইন সংস্করণ করছে।
প্রিন্ট সংস্করণকে আরও বহুমাত্রিক ও নান্দনিক না করে উপায় নেই। তবুও তরুণ পাঠকদের আকর্ষণ করা বেশ চ্যালেঞ্জিংই বটে। এসব কথা মনে রেখেই বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান দৈনিক যুগান্তর সময়ের দাবি মনে রেখেই সফলভাবে এগিয়ে চলেছে। যদিও মূলত সংবাদ এবং তার পেছনের সংবাদ দেওয়ার লক্ষ্যই। তবুও পাঠকের নানামাত্রিক চাহিদা পূরণের যে প্রচেষ্টা দৈনিকটি নিরন্তর করে যাচ্ছে, সেজন্য তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই অভিনন্দন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ শুভক্ষণে পত্রিকাটির সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, বস্তুনিষ্ঠতাই একটি কাগজের সবচেয়ে বড় শক্তি। অযথা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পেছনে লেগে পাঠকসংখ্যা বাড়ানো কোনো পেশাদারি কাগজের লক্ষ্য হতে পারে না। পাঠক ‘কি খাবে’। সে কথা না ভেবে তার চিত্তের চাহিদার ধরন বদলানোর দিকে বেশি করে নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমার বিশ্বাস, দৈনিক যুগান্তর পাঠকের রুচি সংস্কারে অনেকটাই মনোযোগ দিয়ে থাকে। তার প্রমাণ মেলে সাহিত্য পাতার দিকে তাকালেই।
যুগান্তর সাহিত্য পাতায় দেশের প্রথিতযশা লেখক, সাহিত্যিক ও বিদেশি লেখকদের সৃজনশীলতার প্রতিফলন যেমন দেখতে পাই, তেমনি আবার সারা বাংলার উপস্থিতিও চোখে পড়ে। তাই তো প্রত্যেক শুক্রবার জেলার সাহিত্য নিয়ে বিশেষ আয়োজন করে। জেলার সাহিত্যিকদের লেখা এবং ওই জেলার সাহিত্যচর্চার অবস্থা তুলে ধরেন। এটি আসলেই ব্যতিক্রমী এক সাহিত্য আয়োজন।
এ ছাড়া রয়েছে- নারী পাতা, ঘরে বাইরে (লাইফস্টাইল পাতা), ইসলাম ও জীবন, পরবাস (প্রবাসীদের নিয়ে পাতা), বিচ্ছু (রম্যপাতা), তারা ঝিলমিল (বিনোদন পাতা) এবং সম্পাদকীয় পাতা। আমাদের জীবনচলার বিকাশমান চাহিদার কথা মনে রেখেই পত্রিকাটি নানা বয়সের, নানা গোষ্ঠীর পাঠকদের আকর্ষণ করার জন্য এমন কনটেন্ট বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে। সব মিলে যুগান্তর বহুমাত্রিক একটি দৈনিক হিসাবে নিজের স্বাতন্ত্র্য ও পেশাদারির ছাপ বরাবরই রেখে চলেছে। তার এ চলার পথটি আরও সুন্দর ও মসৃণ হোক সেই কামনাই করছি। তার পাঠকপ্রিয়তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক।
লেখক : লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর।