আজকের পত্রিকা

ফাইল ছবি

নৌনিরাপত্তা ব্যবস্থার গোড়াতেই ত্রুটি

ঢাকা (সদরঘাট) থেকে দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী অন্তত ১২টি বড় যাত্রীবাহী লঞ্চ পরীক্ষা করে ইঞ্জিনগত ত্রুটি পাওয়া গেছে। ওই লঞ্চের ইঞ্জিনের বডির ওপর ব্র্যান্ড, হর্সপাওয়ার (শক্তি), নির্মাণ সাল কিছুই উল্লেখ নেই। পুরোনো ইঞ্জিন দিয়ে চালানো হচ্ছে এসব লঞ্চ। অথচ সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন সনদে ভিন্ন ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিনের নাম ও মডেল উল্লেখ রয়েছে।

গত ডিসেম্বরে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ভয়াবহ আগুনে প্রায় অর্ধশত মানুষ মারা যাওয়া অভিযান-১০ লঞ্চেও পুরোনো ইঞ্জিন ছিল। এছাড়া মাওয়ার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী-মাঝিকান্দি রুটে চলাচলকারী ৮৪টি লঞ্চের সবকটিতে কমবেশি নিরাপত্তা ত্রুটি পাওয়া গেছে। এসব লঞ্চের মধ্যে কয়েকটির ভারসাম্যগত ভয়াবহ ঝুঁকিও রয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের নিজস্ব একাধিক প্রতিবেদনে এসব ত্রুটি উল্লেখ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে। সূত্র আরও জানায়, গত নয় বছরের মধ্যে ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ওই বছর ৩৯টি দুর্ঘটনায় ১৪৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হন ১৭৯ জন। এর আগে ২০১২ সালে ১৪টি দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন মারা যান।

সূত্র মতে, নৌযানের কারিগরি ত্রুটির পাশাপাশি পরিচালনা কার্যক্রমেও বড় ঝুঁকি রয়েছে। দেশে অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী নিবন্ধিত ১৪ হাজার ৮০৫টি নৌযানে চাহিদার তুলনায় প্রায় অর্ধেক সংখ্যক সনদধারী চালক ও ইঞ্জিন পরিচালনাকারী ড্রাইভার রয়েছেন। বড় নৌযানে মোট চারজন চালক এবং ইঞ্জিন ড্রাইভার থাকার নিয়ম। বাস্তবে আছে ১২ হাজার ৫৬ জন মাস্টার ও ১১ হাজার ৩০৭ জন ড্রাইভার। এ হিসাবে প্রতিটি নৌযানে দুজন করে সনদধারী মাস্টার ও ড্রাইভার নেই। ফলে বিপুলসংখ্যক নৌযানে রয়েছে অনভিজ্ঞ চালক ও ড্রাইভার।

অপরদিকে এ সংখ্যক নৌযানের ফিটনেস পরীক্ষার পর্যাপ্ত সার্ভেয়ারও নেই। সার্ভেয়ার আছেন মাত্র ছয়জন। এছাড়া দুর্ঘটনা কমাতে কোন রুটে কতসংখ্যক নৌযান চলবে তা নির্ধারণের লক্ষ্যে সব ধরনের নৌযানের রুট পারমিট নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ৭২২টি নৌযান রুট পারমিট রয়েছে। মালিক ও শ্রমিকদের চাপে এ সিদ্ধান্ত পুরোপুরি কার্যকর করতে পারেনি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

নৌনিরাপত্তা ব্যবস্থায় দুর্বলতা থাকার বিষযটি স্বীকার করেছেন নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি যুগান্তরকে বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দুর্বলতা থাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা আইন ও বিধিগুলো যুগোপযোগী করছি। চালকদের প্রশিক্ষণ বাড়ানো হচ্ছে। তারপরও অনেক চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে রয়েছে। আইন মানা, রুট অনুযায়ী নৌযান চলাচল করার মতো চ্যালেঞ্জ নিয়মিত মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এছাড়া মালিক ও যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে।

নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক কয়েকটি নৌদুর্ঘটনার পর দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অভিযান-১০ লঞ্চে অনুমোদনের বাইরে ইঞ্জিন বসানোর দায়ে মাদারীপুর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্সের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। ওই ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের চারজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর আগে রো রো ফেরি আমানত শাহ দুর্ঘটনার পর বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ওই সংস্থায় শুদ্ধি অভিযান চলছে। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নৌযান শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা সরঞ্জাম রাখার বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

বড় লঞ্চে বেশি ঝুঁকি : সংশ্লিষ্টরা জানান, অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের পর বড় বড় লঞ্চগুলোর অবস্থা পরিদর্শনে পাঁচটি কমিটি গঠন করে বিআইডব্লিউটিএ। ওই কমিটিগুলোর মাত্র ১৫-১৮টি লঞ্চ পরিদর্শনের পর বাধার মুখে ওই কার্যক্রম এগোয়নি। ওইসব কমিটির প্রতিবেদনে অন্তত ১২টি লঞ্চে পুরোনো ও নেমপ্লেটবিহীন ইঞ্জিন ব্যবহারের তথ্য উল্লেখ করা হয়। লঞ্চগুলো হচ্ছে-মিতালী-৭, স্বর্ণদ্বীপ-৮, মিরাজ-৬, নিউসান, টিপু-৪, রাজহংস-৮, পারাবত-১৮, আল-ওয়ালিদ-৯, কর্ণফুলী-৩, ফারহান-৪, পারাবত-১৫ ও গ্লোরী-অব-শ্রীনগর-৩।

পরিদর্শন কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা-বরিশাল রুটের পারাবত-১৮ লঞ্চের সার্ভে সনদে ওই লঞ্চে জাপানের আকাসাকা কোম্পানির ৭০০ হর্সপাওয়ার শক্তিসম্পন্ন দুটি ইঞ্জিনের কথা উল্লেখ রয়েছে। বাস্তবে যে ইঞ্জিন রয়েছে সেটিতে কোনো নেমপ্লেট না থাকায় কোম্পানি, মডেল ও হর্সপাওয়ার সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়নি। যে ইঞ্জিন দুটি রয়েছে তা অনেক পুরোনো বলে কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। ঢাকা-চাঁদপুর রুটের মিতালী-৭ লঞ্চের সার্ভে সনদে যে ইঞ্জিন থাকার কথা সেটি ছিল না। সেখানে দুটি পুরোনো ইঞ্জিন পেয়েছে কমিটি। ঢাকা-হাটুরিয়া রুটের এমভি স্বর্ণদ্বীপ-৮ লঞ্চের ইঞ্জিনেও কোনো নেমপ্লেট পায়নি কমিটি। এর ফলে ওই ইঞ্জিনের সম্পর্কে কোনো তথ্য জানতে পারেনি কমিটি।

নৌখাতের সংশ্লিষ্ট একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গত বছরের ডিসেম্বরে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সার্ভে সনদে যে ইঞ্জিন উল্লেখ ছিল লঞ্চটিতে তা ছিল না। অগ্নিকাণ্ডের কয়েক মাস আগে অনেক বছরের পুরোনো ইঞ্জিন বসানো হয় ওই লঞ্চে।

তারা বলেন, নৌনিরাপত্তা ব্যবস্থার গোড়াতেই গলদ থাকায় মারাত্মক ঝুঁকি থাকার পরও অনেক নৌযান নিয়মিত চলাচল করতে পারছে। প্রতিনিয়ত বহন করছে যাত্রী ও পণ্য। বড় বড় ত্রুটি থাকার পরও অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় রেজিস্ট্রেশন ও সার্ভে সনদও পেয়েছে। নিয়েছে রুট পারমিটও।

লঞ্চে পুরোনো নয়, রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল (যাপ) সংস্থার সহসভাপতি মো. আবুল কালাম খান। সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন সনদে তথ্য গোপন করা উঠিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি যুগান্তরকে বলেন, সনদে ইঞ্জিনের যে হর্সপাওয়ার লেখা থাকে বাস্তবে তাই থাকা উচিত।

ইঞ্জিনের গায়ে নেমপ্লেট না থাকলেও খোদাই করা সিরিয়াল নম্বর থাকে। যেই কোম্পানির ইঞ্জিন সেই কোম্পানির ওয়েবসাইটে গেলে ওই মেশিন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

পুরোনো ইঞ্জিনে যাত্রীবাহী লঞ্চ পরিচালনায় ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চাইলে নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মো. আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, ঝুঁকি অবশ্যই আছে। ত্রুটি রেখে সার্ভে সনদ দেওয়া বিধিসম্মত নয়। বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে কিছু শর্ত বা পর্যবেক্ষণ দিয়ে সার্ভে সনদ দেওয়া হয়। ওইসব শর্ত প্রতিপালন করা মালিকের দায়িত্ব। আর যদি ত্রুটি রেখেই নিজস্ব ক্ষমতাবলে সার্ভেয়ার সনদ দেন সেজন্য ওই সার্ভেয়ার নিজেই দায়ী হবেন। এ বিষয়ে আমাদের কঠোর অবস্থানের কথা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি।

যাত্রীবাহী লঞ্চে পুরোনো ইঞ্জিন ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু লঞ্চের ইঞ্জিনের বডিতে নাম ও হর্স পাওয়ার (শক্তি) উল্লেখ থাকার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি করা হয়েছে। পাশাপাশি ডকইয়ার্ড, মালিক ও সার্ভেয়ারদের বলা হয়েছে, ইঞ্জিনের বিষয়ে কোনো তথ্য না থাকলে সেগুলোর সার্ভে সনদ বাতিল করা হবে।

শিমুলিয়া-কাঁঠালিয়া রুটের লঞ্চ ঝুঁকিপূর্ণ করেছেন মালিকরাই : শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী-মাঝিরকান্দি নৌরুটে চলাচলকারী ৮৪টি লঞ্চের সবকটিতেই কমবেশি ত্রুটি পেয়েছেন নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. জহিরুল কাইয়ুম। সংস্থাটির মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো এক সরেজমিন প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, বেশিরভাগ লঞ্চে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে বেশি আসন বসানো হয়েছে। যাত্রীদের হাতের নাগালে জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম বয়া রাখার ব্যবস্থা নেই।

ওই প্রতিবেদনে সবকটি লঞ্চের পৃথক নাম ও সমস্যাও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এমভি ফোরম্যান লঞ্চের রেজিস্ট্রেশন সনদের ওপরের ডেকে ৯ জন যাত্রী বসার কথা উল্লেখ রয়েছে। বাস্তবে আসন রয়েছে ৫২টি। একইভাবে এমভি মাসুদ খান লঞ্চের ওপরের ডেকে ১২ জন বসার কথা রেজিস্ট্রেশন সনদে উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে আছে ৩৮ জন। এমএল আমজাদ, এমএল বেপারী-২, এমএল রাজিব এক্সপ্রেস, এমএল সেভেন স্টার-৩সহ আরও কিছু লঞ্চে একই ধরনের ত্রুটি থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রায় সব নৌযানের ওপরের ডেকে বাড়তি যাত্রী বহন ছাড়াও ডেকের পেছনে খালি জায়গা ও ছাদে (ডাবুশ) যাত্রী পরিবহণ করা হয়। ফলে নৌযানের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে নৌদুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এভাবে যাত্রী বহন না করতে স্ব স্ব লঞ্চের মালিক ও মাস্টারদের অনুরোধ করা হলেও তারা ওই আদেশ অমান্য করে প্রায়ই যাত্রী পরিবহণ করে থাকে।

ঝুঁকিপূর্ণ জানা সত্ত্বেও চলছে সানকেন ডেক লঞ্চ : পিনাক-৬সহ একাধিক লঞ্চডুবির তদন্ত প্রতিবেদনে সানকেন (নিমজ্জিত) ডেকবিশিষ্ট লঞ্চ বন্ধের সুপারিশ করা হয়। ওই সুপারিশ উপেক্ষা করে বাস্তবে সারা দেশে দুই শতাধিক সানকেন ডেক বিশিষ্ট লঞ্চ চলাচল করছে। এর মধ্যে মাওয়ায় প্রায় ৮০টি, আরিচায় ৩৪টি, নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৭০টি, ভৈরব এলাকায় ৪০টির বেশি এ ধরনের লঞ্চ চলে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় নৌদুর্ঘটনার পর ওই জেলা থেকে সব ধরনের সানকেন ডেকবিশিষ্ট লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধের আদেশেও এসব লঞ্চে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে বলে উল্লেখ করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সানকেন ডেকবিশিষ্ট লঞ্চ অল্প আঘাত পেলেই বা বৈরী আবহাওয়া হলেই ডুবে যায়। পিনাক-৬, সাবিত আল হাসান ও এমএল আফসার উদ্দিন এর বড় উদাহরণ। তারা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও মন্ত্রণালয়ের এক আদেশের সুযোগে ৫০ বছরের পুরোনো সানকেন ডেকবিশিষ্ট ছোট লঞ্চ এখনো চলাচল করছে। যদিও আইনে একটি নৌযানের আয়ুষ্কাল ৪০ বছর।

তারা জানান, ২০১৫ সালের ১৯ মার্চ এক প্রজ্ঞাপনে কাঠ ও স্টিল মিশ্রণে নির্মিত লঞ্চ স্টিলবডিতে রূপান্তরিত হলে এবং সেগুলোর স্ট্যাবিলিটি বুকলেট অনুযায়ী উপযুক্ততা পাওয়া গেলে তা অনুমোদন পাবে বলে উল্লেখ করা হয়। এ আদেশের সুযোগ নিয়ে অসংখ্য সানকেন ডেকবিশিষ্ট লঞ্চ চলাচল করছে। উদাহরণ হিসেবে তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জে দুর্ঘটনাকবলিত এমএল আফসার উদ্দিন ১৯৭৩ সালে নির্মাণ করা হয়। তখন এটি কাঠের ছিল। পরে ১৯৮৪ সালে পুনর্নির্মাণ করা হয়। এ লঞ্চটির বয়স ৪৯ বছর।