আজকের পত্রিকা

জুলাইয়ে নতুন ৪৪ প্রকল্পের কাজ শুরু

জুলাইয়ে নতুন ৪৪ প্রকল্পের কাজ শুরু

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে (জুলাই থেকে) ৪৪টি নতুন প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৮টি বিনিয়োগ, ২টি কারিগরি সহায়তা ও ৪টি নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্প। এসব প্রকল্পের অনুকূলে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ রয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে মেগা কোনো প্রকল্প থাকছে না। চলতি অর্থবছরে নতুন প্রকল্প ছিল ৩৬টি। এ হিসাবে আগামী অর্থবছর শুরুতেই বেড়েছে ৮টি প্রকল্প।

তবে নতুন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিতে গিয়ে তিনি এমন নির্দেশ দেন। কোভিড-১৯ মহামারি এবং চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে শুধু জনগুরুত্বপূর্ণ ছাড়া যেনতেন প্রকল্প গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বুধবার যুগান্তরকে বলেন, আমরা সব সময়ই চাই প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হোক। কিন্তু বাস্তবতা অন্যরকম। ফলে সংশোধন করতেই হয়। যেমন: করোনা আসবে, এটা কেউ কি জানত? এছাড়া জমির সংকট প্রকট। মানুষ সন্তানকে অনেক সময় ছাড়তে চায়; কিন্তু জমি ছেড়ে দিতে চায় না। আছে আরও নানা জটিলতা। এসব কারণে সংশোধন করতে হয়। তবে শুরু হতে যাওয়া নতুন প্রকল্পগুলো যাতে নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হয়, সেজন্য বিশেষ মনিটরিং থাকবে।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে নতুন প্রকল্প গ্রহণের চেয়ে পুরোনো প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়ানো উচিত। রাজনৈতিক বিবেচনা না করে একান্ত জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রকল্প হাতে নেওয়া দরকার। এছাড়া নতুন প্রকল্প নেওয়ার সময় যতটা উৎসাহ থাকে পরবর্তী সময়ে শেষ করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের তেমন উৎসাহ থাকে না। ফলে প্রকল্প মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি যেন একটা নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে সময় ও অর্থের ব্যাপক অপচয় হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রকল্প থেকে যে সুফল পাওয়ার কথা, সেটি সময়মতো মিলছে না। নতুন এসব প্রকল্প যাতে নির্ধারিত মেয়াদেই শেষ করা যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এডিপি অনুমোদনের সময় নতুন প্রকল্প কম থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা অনেক বেড়ে যায়। এর লাগাম টানতে হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছর বাস্তবায়ন শুরু হতে যাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতের ৮টি। গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতের ৮টি, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ খাতের ৭টি, কৃষি খাতে ৬টি, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবার ৩টি এবং প্রতিরক্ষা খাতের ২টি প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যের ৩টি, শিক্ষার ৩টি, ধর্ম-সংস্কৃতি ও বিনোদনের একটি, সামাজিক সুরক্ষায় ২টি এবং বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের একটি প্রকল্প রয়েছে।

পরিকল্পনা সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী যুগান্তরকে বলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এনইসি বৈঠকে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচারবিশ্লেষণের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই আগামী অর্থবছরের জন্য অনুমোদনহীন যেসব নতুন প্রকল্প ধরা হয়েছে সেগুলো রিভিউ করা হবে। এডিপির বইয়ে আছে বলেই যে অনুমোদন করা হবে, তেমনটি হবে না। নতুন যেসব প্রকল্পে যাত্রা শুরু হচ্ছে সেগুলো যাতে সঠিকভাবে কাজ চলে, সেটি নিশ্চিত করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় মনিটরিং বাড়াবে। সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছর শুরু হতে যাওয়া নতুন প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-মোংলা কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েস্টের (কমফ্লোট ওয়েস্ট) অবকাঠামো উন্নয়ন, স্মার্ট কৃষি কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) প্রকল্প ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন।

সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে এসব অনুমোদিত প্রকল্পের বাইরে আরও ৬৫৯টি অনুমোদনহীন নতুন প্রকল্পের তালিকা যুক্ত রয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুরো অর্থবছর এসব প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।