আলোচিত মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর নিঃসঙ্গ জীবন কাটছে কনডেম সেলে। মঙ্গলবার কারাগারে নেওয়ার পরই তাদের পরানো হয় কয়েদির পোশাক। পরে তাদের দুজনকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় পৃথক কনডেম সেলে। তারা একেবারেই নিশ্চুপ হয়ে গেছেন। কথা হয় কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার নেছার আলমের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, তারা চুপচাপ রয়েছেন। স্বাভাবিক খাবার দেওয়া হচ্ছে এবং খাচ্ছেন।
সোমবার রায় ঘোষণার সময় ওসি প্রদীপ ও লিয়াকত আদালত প্রাঙ্গণেও ছিলেন নির্বিকার। কারাগারে নেওয়ার পথেও তাদের নিশ্চুপ দেখা যায়। তবে কয়েকদিন আগে একজন কারারক্ষীর সঙ্গে কথা হয় ওসি প্রদীপের। ওই কারারক্ষীর কাছে ওসি প্রদীপ এ মামলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাকে বলেছেন, বড় বড় অনেক ঘটনার পর তিনি সহজেই পার পেয়ে গেছেন। অথচ এ তুচ্ছ ঘটনায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে। জেল সুপার নেছার আলম বলেন, ওসি প্রদীপ কুমারকে ৩নং কনডেম সেলের ১নং কক্ষে ও লিয়াকতকে ৩নং কনডেম সেলের ৩নং কক্ষে রাখা হয়েছে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনজনকে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে এবং তিনজনকে পৃথকভাবে রাখা হয়েছ। কয়েদির পোশাকে তাদেরও সময় কাটছে চুপচাপ।
মুক্তি পেলেন নির্দোষ ৭ পুলিশ সদস্য : এদিকে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় খালাসপ্রাপ্ত সাত পুলিশ সদস্য কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় তারা নিজ নিজ বাড়ি ফিরে গেছেন। মেজর (অব.) সিনহা পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার ১৮ মাস পর সোমবার ৩১ জানুয়ারি মামলার রায় ঘোষণা করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রায়ে বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও ওসি প্রদীপকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও বাকি সাত আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন-এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্ট পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহ। পরে নিহতের বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে মামলা করেন।